মহামান্য আপিল বিভাগ ০১ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে উল্লেখিত বিভ্রান্তির অবসান ঘটিয়ে একটি চমৎকার রায় প্রদান করেছেন।
উক্ত রায়ের সারমর্ম মতে, প্রাথমিক অর্থে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড মানে ৩০ (ত্রিশ) বছর কারাদণ্ড। সেই ক্ষেত্রে একজন আসামি রেয়াতের সকল সুবিধা পাবে। তবে দেশের কোনো আদালত, ট্রাইবুনাল বা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তার রায়ে যদি উল্লেখ করেন যে, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অর্থ আমৃত্যু কারাদণ্ড। সেই ক্ষেত্রে আসামিকে স্বাভাবিক মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত কারাভোগ করতে হবে।
যদিও দণ্ডবিধির ৫৭ ধারায় সাজার মেয়াদের ভগ্নাংশ হিসেবের ক্ষেত্রে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের অর্থ ৩০ বছর এবং দণ্ডবিধির ৫৩ ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অবশ্যই সশ্রম হতে হবে মর্মে উল্লেখ রয়েছে; সেক্ষেত্রে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অর্থ ৩০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড বরং আমৃত্যু নয় মর্মে অনেকে ব্যাখ্যা প্রদান করে থাকেন।
আবার দণ্ডবিধির ৫৩ ধারার সাথে ৪৫ ধারা (জীবন শব্দটি দিয়ে মানুষের জীবন বুঝাবে) মিলিয়ে পড়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বলতে আমৃত্যু কারাদণ্ড বরং ৩০ বছর নয় মর্মেও অনেকে ব্যাখ্যা প্রদান করেন।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে, কোন ব্যাখ্যাই প্রাথমিক দৃষ্টিতে ভুল নয়। আর সে কারণেই মহামান্য আপিল বিভাগের এ রায় শতভাগ সঠিক বলে আমি মনে করি। তাই এটা সম্পূর্ণ পরিস্কার যে, রায়ে যদি উল্লেখ থাকে, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অর্থ আমৃত্যু কারাদণ্ড তাহলে আসামিকে স্বাভাবিক মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত কারাভোগ করতে হবে। অন্যথায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বলতে ৩০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড বুঝাবে।
আলোচকঃমো. এস এইচ সোহাগ,
আইনজীবী, জজ কোর্ট, ঢাকা।