সন্তান ভরণপোষণ

সন্তান ভরণপোষণ না দিলে আইনগত প্রতিকার

আইনগত অধিকার
বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

সমস্যাঃ ধরুন, আপনার সন্তান আপনাার ভরণপোষণ অর্থাৎ খাওয়া-দাওয়া, বস্ত্র, চিকিৎসা ও বসবাসের সুবিধা এবং সঙ্গ প্রদান করছে না – এক্ষেত্রে আইনগত প্রতিকার কি?

সমাধানঃ উল্লেখিত ক্ষেত্রে আপনি পিতা-মাতার ভরণপোষণ আইন, ২০১৩ এর বিধান মতে আইনগত প্রতিকার পেতে পারেন।

এই আইনের মূল বিষয় হলো প্রত্যেক সন্তানকে তার পিতা-মাতার ভরণপোষণ নিশ্চিত করতে হবে। ভরণপোষণ বলতে বোঝায় নিয়মিত খাওয়া-দাওয়া প্রদান করা, প্রয়োজনীয় বস্ত্র প্রদান করা, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা প্রদান করা, বসবাসের সুবিধা দেয়া এবং নিয়মিত সঙ্গ প্রদান করা। এর যে কোন একটির ব্যত্যয় ঘটলেই এই আইনের অধিনে প্রতিকার পাওয়া যায়।

সুতরাং এরূপ ক্ষেত্রে আপনি পিতা-মাতার ভরণপোষণ আইন, ২০১৩ এর ৫ ধারায় প্রতিকার প্রার্থনা করে মামলা দায়ের করতে পারেন।

আইন সংক্রান্ত কোন বিষয় জানতে চাইলে আপনার প্রশ্নটি আমাদেরকে জানান; প্রশ্ন জানাতে এখানে ক্লিক করুন

কোথায় মামলা দায়ের করা যাবে
সন্তান ভরণপোষণ না দিলে আপনি চাইলে থানায় কিংবা বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করতে পারবেন। থানায় যদি মামলা নিতে না চায় তাহলে কোন অসুবিধা নাই। একজন বিজ্ঞ আইনজীবীর শরণাপন্ন হয়ে তার পরামর্শ মতো বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করতে পারবেন। এক্ষেত্রে বিজ্ঞ আদালত সরাসরি মামলা আমলে গ্রহণ করে আসামির বিরুদ্ধে সমন ইস্যু করতে পারেন কিংবা সরাসরি আমলে গ্রহণ না করে সংশ্লিষ্ট থানাকে আদেশ দিতে পারেন তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য। তদন্ত প্রতিবেদনে আপনার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে বিজ্ঞ আদালত তখন মামলাটি আমলে গ্রহণ করে আসামির বিরুদ্ধে সমন ইস্যু করতে পারেন।

পিতা-মাতার ভরণপোষণ প্রদান না করার শাস্তি
সর্বোচ্চ ১ (এক) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড; উক্ত অর্থদণ্ড প্রদান না করলে সর্বোচ্চ ৩ (তিন) মাস কারাদণ্ড।

এই ব্লগে আপনার নিজের লেখা আর্টিকেল প্রকাশ করতে আমাদেরকে পাঠান; আর্টিকেল পাঠাতে এখানে ক্লিক করুন

 

ভরণপোষণ আইন, ২০১৩ এর ৫ ধারাটি নিম্নে তুলে ধরা হলো-

(১) কোন সন্তান কর্তৃক ধারা ৩ এর যে কোন উপ-ধারার বিধান কিংবা ধারা ৪ এর বিধান লংঘন অপরাধ বলিয়া গণ্য হইবে এবং উক্ত অপরাধের জন্য অনূর্ধ্ব ১ (এক) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবে; বা উক্ত অর্থদণ্ড অনাদায়ের ক্ষেত্রে অনূর্ধ্ব ৩ (তিন) মাস কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবে।

(২) কোন সন্তানের স্ত্রী, বা ক্ষেত্রমত, স্বামী কিংবা পুত্র-কন্যা বা অন্য কোন নিকট আত্নীয় ব্যক্তি—

(ক) পিতা-মাতার বা দাদা-দাদীর বা নানা-নানীর ভরণ-পোষণ প্রদানে বাধা প্রদান করিলে; বা

(খ) পিতা-মাতার বা দাদা-দাদীর বা নানা-নানীর ভরণ-পোষণ প্রদানে অসহযোগিতা করিলে—

তিনি উক্তরূপ অপরাধ সংঘটনে সহায়তা করিয়াছে গণ্যে উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত দণ্ডে দণ্ডিত হইবে।

 

আলোচকঃ
মাফতিজা নূর লুচী,
আইনজীবী, জজ কোর্ট, ঢাকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *